ডেটা ইন্টারসেপশন কি | ডেটা ইন্টারসেপশন বলতে কি বুঝায় | ডেটা ইন্টারসেপশন থেকে বাঁচার উপায়
আজকের ডিজিটাল যুগে আমরা প্রতিনিয়ত ইন্টারনেট ব্যবহার করে নানা ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করি। এই তথ্যগুলো অনেক সময় হ্যাকারদের নজরে পড়ে যায় এবং তারা সেটি চুরি করে ফেলে। মূলত এটিকে ডেটা ইন্টারসেপশন বলা হয়।
ডেটা ইন্টারসেপশন একটি গুরুতর সাইবার হুমকি যা আমাদের ব্যক্তিগত, আর্থিক ও গোপনীয় তথ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। এই আর্টিকেলে আমরা ডেটা ইন্টারসেপশন কি, কেন এটি বিপজ্জনক এবং কীভাবে আমরা এটি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি সেগুলো সম্পর্কে।
ডেটা ইন্টারসেপশন কি বা কাকে বলে
ডেটা ইন্টারসেপশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে তৃতীয় পক্ষ অবৈধ ভাবে দুইটি ডিভাইস বা ব্যক্তির মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া তথ্য মাঝপথে ক্যাচ করে। এই প্রক্রিয়ায় আক্রমণকারী ব্যবহারকারীর অজান্তেই ইন্টারনেট, ওয়াই-ফাই বা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রেরিত তথ্য দেখতে পারে।
সবচেয়ে সাধারণ উদাহরণ হলো; পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করার সময় তথ্য চুরি। অনেক সময় এই তথ্যগুলোর মধ্যে থাকে পাসওয়ার্ড, ব্যাংক ডিটেলস, ইমেইল, ব্যক্তিগত ছবি ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: ফোল্ডারের কাজ কি | ফাইল ও ফোল্ডার কি | সাব ফোল্ডার কাকে বলে | ফাইল ও ফোল্ডারের মধ্যে পার্থক্য
ডেটা ইন্টারসেপশন বলতে কি বুঝায়
ডেটা ইন্টারসেপশন মানে হচ্ছে, কোনো তথ্য আদান-প্রদানের সময় ওই তথ্য অনুমতি ছাড়াই দেখে ফেলা বা কপি করে নেওয়া। এটি একটি সাইবার অপরাধ এবং এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা ভঙ্গ হয়।
ডেটা ইন্টারসেপশন অনেক ভাবে হতে পারে যেমন; নেটওয়ার্ক স্নিফিং, ম্যান-ইন-দ্য-মিডল (MITM) আক্রমণ বা ফিশিং অ্যাটাক। এইসব কৌশল ব্যবহার করে হ্যাকাররা ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে।
ডেটা ইন্টারসেপশন থেকে বাঁচার উপায়
ডেটা ইন্টারসেপশন থেকে রক্ষা পেতে হলে কয়েকটি সাধারণ নিয়ম মানতে হবে। প্রথমত, কখনোই কোন পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার বা আদান-প্রদান করবেন না।
দ্বিতীয়ত, আপনি যখন কোনো ওয়েবসাইটে তথ্য প্রদান করেন তখন অবশ্যই নিশ্চিত করুন সেই সাইট HTTPS সিকিউরিটি ব্যবহার করছে কিনা। এছাড়াও, আপনার ডিভাইস ও সফটওয়্যার সবসময় আপডেট রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
ভিপিএন (VPN) ব্যবহার করলে আপনার তথ্য এনক্রিপ্টেড অবস্থায় থাকে, ফলে হ্যাকারদের পক্ষে তা পড়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।
ডেটা ইন্টারসেপশন প্রতিরোধের উপায়
ডেটা ইন্টারসেপশন প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে। প্রতিটি অনলাইন কার্যক্রমের সময় নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম ও নিরাপদ সংযোগ ব্যবহার করতে হবে।
সবসময় শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত এবং নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা ভালো। এছাড়াও, সন্দেহজনক ইমেইল বা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
ব্যক্তিগত তথ্য কখনোই অপরিচিত কারো সাথে শেয়ার করা উচিত নয়। আধুনিক অ্যান্টিভাইরাস এবং ফায়ারওয়াল ব্যবহার করেও এই ধরনের আক্রমণ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
উপসংহার
ডেটা ইন্টারসেপশন আজকের দিনে একটি বড় সাইবার হুমকি। এটি আমাদের ব্যক্তিগত ও আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। কিন্তু কিছু সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করে আমরা এই হুমকি থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারি। সতর্কতা, প্রযুক্তি জ্ঞান এবং সচেতন ব্যবহারই হতে পারে ডেটা ইন্টারসেপশন রোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।