মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স কি | মোটর সাইকেল ইন্সুরেন্সের সুবিধা ও অসুবিধা

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স কি | মোটর সাইকেল ইন্সুরেন্সের সুবিধা ও অসুবিধা
মোটর সাইকেল আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি বাহন। যানজটের মধ্যে দ্রুত চলাচলের জন্য অনেকেই মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন। মোটর সাইকেল ব্যবহারকারীদের একটি বড় দায়িত্বও রয়েছে, আর সেটি হলো; মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স করা।

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স কী, ইন্সুরেন্স করা কেন জরুরি এবং এর সুবিধা, অসুবিধাগুলো কী কী সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানবো। তাহলে চলুন মূল আলোচনা শুরু করি।

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স কি

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স একটি চুক্তিভিত্তিক আর্থিক সেবা, যা আপনার মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, চুরি, অগ্নিকাণ্ড অথবা অন্যান্য ভাবে ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করে।

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স মূলত নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য কার্যকর (Valid) থাকে এবং সেটি সময়মতো ইন্সুরেন্স নবায়ন করতে হয়।

বাংলাদেশে 'থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স' রয়েছে যার মাধ্যমে আপনার মোটরসাইকেল যদি কোনো দুর্ঘটনায় অন্য কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তবে সেই ক্ষতিপূরণ ইন্সুরেন্স কোম্পানি বহন করবে।

এছাড়াও, অনেকে 'কমপ্রিহেনসিভ ইন্সুরেন্স' বেছে নেন, যার মাধ্যমে বাইকের ক্ষয়ক্ষতির খরচ কভার করা যায় এবং এই ধরণের ইন্সুরেন্সে চুরি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আগুন বা দুর্ঘটনার সব দিক কাভার করে থাকে।

মোটর সাইকেল ইন্সুরেন্স কেন করতে হয়

প্রথমত, আইনি বাধ্যবাধকতা। কিন্তু বর্তমানে মোটরসাইকেল ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের আইনে বাধ্যতামূলক নয় তবে, পূর্বে এটি বাধ্যতামূলক ছিল। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেও মোটরসাইকেল ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক।

দ্বিতীয়ত, দুর্ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে — এটি অনিশ্চিত। একটি ছোট দুর্ঘটনাও আর্থিক ভাবে বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। ইন্সুরেন্স থাকলে এই ক্ষতিগুলো সহজে কাটিয়ে ওঠা যায়।

তৃতীয়ত, যদি বাইক চুরি হয়ে যায় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন যদি বাইকের ইন্সুরেন্স করা থাকে তবে, আপনি আপনার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন।

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্সের সুবিধা

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্সের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো; দুর্ঘটনার সময় এটি আর্থিক সুরক্ষা দেয়। এটি আপনাকে চিকিৎসা ব্যয়, বাইকের ক্ষয়ক্ষতি অথবা তৃতীয় পক্ষের ক্ষতিপূরণ প্রদান করে।

আরেকটি বড় সুবিধা হলো; মানসিক প্রশান্তি। বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হলে যদি কিছু হয়েও যায় ইন্সুরেন্স কোম্পানি আপনার পাশে থাকবে এটি ভাবলে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়।

অনেকে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাইক কেনেন। সেক্ষেত্রে ইন্সুরেন্স করা না থাকলে কোনো দুর্ঘটনা হলে লোন শোধ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। কিন্তু ইন্সুরেন্স সেই চাপ সহজে সামলানো যায়।

এছাড়াও, বর্তমানে অনেক ইন্সুরেন্স কোম্পানি জরুরি সেবা, টোইং সার্ভিস, অনলাইন ক্লেইম সুবিধা ইত্যাদিও দিয়ে থাকে, যা একজন বাইকারের জন্য অনেক সুবিধাজনক।

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্সের অসুবিধা

যদিও মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্সের অনেক সুবিধা রয়েছে তবে, মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্সের কিছু অসুবিধাও রয়েছে যেগুলো জেনে রাখা উচিত।

প্রথমত, প্রত্যেক বছর প্রিমিয়াম দিতে হয়, যা অনেকের কাছে বাড়তি ব্যয় মনে হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, কিছু ইন্সুরেন্স কোম্পানি ক্ষতিপূরণ প্রদানে সময় নেয় বা নানা রকম নিয়মকানুন দেখিয়ে দেরি করে, যা ভোগান্তির কারণ হতে পারে।

তৃতীয়ত, যদি আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো তথ্য গোপন করেন বা ভুল তথ্য দেন, তাহলে ক্লেইম রিজেক্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

এছাড়া সব ধরণের ক্ষয়ক্ষতি ইন্সুরেন্স কভার করে না। কিছু কিছু পরিস্থিতি যেমন; অবৈধ রাস্তায় চালানো, মদ্যপ অবস্থায় দুর্ঘটনা ইত্যাদি এসব ক্ষেত্রে ক্লেইম গ্রহণযোগ্য হয় না।

উপসংহার

মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্স কি, কেন করতে হয় এবং মোটরসাইকেল ইন্সুরেন্সের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তবে, আপনার যদি কোন বিষয়ে বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে আমাদের সেই বিষয়টি সম্পর্কে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন
পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন
এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি
মন্তব্য করুন
comment url




আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল জয়েন করুন