বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা কত ২০২৫ | বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তালিকা | ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কাকে বলে
বাংলাদেশ একটি বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দেশ। বাংলাদেশে প্রধানত বাঙালিদের বসবাস হলেও এখানে বসবাস করে আসছে নানা ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃগোষ্ঠী। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আজকের আর্টিকেলে ২০২৫ সালের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা, তালিকা এবং এদের পরিচয় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা কত ২০২৫
২০২৫ সালের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সরকারি স্বীকৃত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা ৫১টি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মোট জনসংখ্যা ১৬ লাখ ৫০ হাজারের কাছাকাছি, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ০.৯৯ শতাংশের মত। যদিও তাদের সংখ্যা কম, তবে তাদের জাতিগত পরিচয় ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তালিকা
বর্তমানে বাংলাদেশে বাস করে চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, ত্রিপুরা, গারো, ম্রো, খিয়াং, চাক, বম, লুসাই, পাংখোয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, ওঁরাও, মনিপুরী, হাজং, কোচ, খাসিয়া, রাখাইন, মণিপুরী, মুন্ডা, ভূমিজ, পাহাড়িয়া, ডালু, কুকি, হদি, খারিয়া, পাঙনসহ আরও অনেকে।
এই গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম, ও সংস্কৃতি অনুসরণ করে, যার ফলে বাংলাদেশের সামাজিক বৈচিত্র্য আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পূর্নাঙ্গ তালিকা নিচে প্রদান করা হয়েছে।
- চাকমা
- ওঁরাও
- তঞ্চ্যঙ্গা
- মারমা
- সাঁওতাল
- ত্রিপুরা
- গারো/আ·চিক
- ম্রো
- বম
- পাংখো
- চাক
- খেয়াং
- খুমি
- মণিপুরী
- হাজং
- খাসিয়া বা খাসি
- লুসাই
- কোচ
- ডালু
- কুকি
- রাখাইন
- মং
- বর্মন
- পাহাড়ি
- মালপাহাড়ি
- পাঙন
- লাওরা
- মুরং
- রাজবংশী
- পাত্র
- গণ্ড
- মুন্ডা
- ভূমিজ
- কোল
- কন্দ
- ব্যাক্তি
- ভিল
- খারিয়া/খাড়িয়া
- খারওয়ার/খেড়োয়ার
- টিপরা
- রনজোগী
- হদি
আরো পড়ুন: এশিয়ার দীর্ঘতম নদী কোনটি, এশিয়ার দীর্ঘতম নদী কোথায় অবস্থিত, এশিয়ার বৃহত্তম নদী দ্বীপ কোনটি
বাংলাদেশের মুসলিম উপজাতি কয়টি
বাংলাদেশে বেশিরভাগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান ধর্মে অনুসারী হলেও পাঙন বা পাঙাল নামের একটি মুসলিম উপজাতি রয়েছে। এদের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার এবং এরা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ অঞ্চলে বসবাস করে। তারা ইসলামী শরিয়ত অনুসরণ করে এবং সমাজে একটি আলাদা পরিচয়ে টিকে আছে।
বাংলাদেশের মোট কতটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ৫১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে। তবে, কিছু গবেষক মনে করেন, বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে কারণ কিছু জনগোষ্ঠী এখনও স্বীকৃতি পায়নি কিংবা স্থানীয়ভাবে তত পরিচিত নয়।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নাম
চাকমা, মারমা, গারো, ম্রো, বম, খিয়াং, খুমি, সাঁওতাল, ত্রিপুরা, কোচ, রাখাইন, হাজং, ওঁরাও, মনিপুরী, খাসিয়া, মুন্ডা, ডালু, খারিয়া, হদি, পাঙন ইত্যাদি নামগুলি বাংলাদেশে স্বীকৃত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর অন্তর্ভুক্ত। এরা দেশের সিলেট, রাজশাহী, ময়মনসিংহ এলাকায় বসবাস করে থাকে।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কাকে বলে
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলতে এমন একটি জনগোষ্ঠীকে বোঝায়, যারা সংখ্যায় কম হলেও একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় বসবাস করে এবং যাদের নিজস্ব ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিচয় রয়েছে। তারা অন্যান্য জনগোষ্ঠী থেকে নিজেদের ভিন্ন ভাবতে ভালোবাসে এবং নিজস্ব ঐতিহ্য রক্ষা করে চলতে পছন্দ করেন।
উপসংহার
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সংখ্যায় কম হলেও, তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা আমাদের জাতিকে করে তুলেছে বৈচিত্র্যময় ও মানবিক। তাদের স্বীকৃতি ও অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। ২০২৫ সালে এসে এই নৃগোষ্ঠীগুলোর অবদান নতুনভাবে মূল্যায়নের সময় এসেছে।